সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ১১:৫৫ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ
নিট পরীক্ষা দিতে এসে, স্কুলে সাপের ছোবল পরীক্ষার্থীকে, জেলা জুড়ে চাঞ্চল্য তমলুকে শিক্ষকদের অনশন মঞ্চে , হামলার অভিযোগে ধিক্কার মিছিল ভালুকায় পথচারীদের মাঝে পানি ও স্যালাইন বিতরণ ভালুকায় মে দিবস উপলক্ষে মটরযানর‌্যালী কর্মচারী শ্রমিক ইউনিয়নের আজ স্বর্গীয় সতিন্দ্র লাল দাশ গুপ্তের ৯তম মৃত্যু বার্ষিকী সরিষাবাড়ীতে নির্বাচনী আচরণ বিধি লংঘনের অভিযোগে দুই আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার সাংবাদিক হয়রানি মিথ্যা মামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে উত্তরায় মানববন্ধন  জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন গাছা থানা কমিটির অনুমোদন উড়িষ্যা থেকে কলকাতা ফেরার পথে ,ব্রীজ থেকে উল্টে পড়লো যাত্রীবাহী বাস যুক্তরাজ্য শেফিল্ড আওয়ামী লীগের ইফতার ও দোয়া মাহফিল

চাপাইনবাবগঞ্জ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে জোরপূর্বক ৭৩টি আমগাছ বিক্রি ও কেটে নিধনের অভিযোগ

 

নিউজ দৈনিক ঢাকার কন্ঠ 

এস এম রুবেল  চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

 

চাঁপাইনবাবগঞ্জে মামলা চলমান অবস্থায় আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে জোরপূর্বক ২০ লাখ টাকা মূল্যের ৭৩টি আমগাছ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া উত্তরাধিকারী ১৫ জন চাচাতো ভাই-বোনকে জমির ভাগ না দিয়েই গাছগুলো বিক্রি করা হয়েছে। বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল থেকে গাছগুলো কাটা হচ্ছে। গাছ কাটতে বাধা দিতে গেলে উল্টো নানানরকম হুমকি-ধমকি ও প্রাণনাশের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে প্রভাবশালী মহল।

চাঁপানবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের বাগানপাড়া এলাকার এসব গাছ কাটা হচ্ছে। বুধবার ও বৃহস্পতিবার দুই দিনে ১০টি গাছ কাটা হয়ে গেছে। বাকিগুলোও কাটছে শ্রমিকরা। অভিযোগ রয়েছে, সদর উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আসজাদুর রহমান মান্নু মিয়ার যোগসাজশে জোরপূর্বক গাছগুলো কাটছে গোবরাতলা ইউনিয়নের দিয়াড় ধাইনগর গ্রামের মো. রমজান আলীর তিন ছেলে মনিরুল, নুরুল ও হোসেন।

জানা যায়, দিয়াড় ধাইনগর এলাকার মৃত হাজি জাহির উদ্দিনের ২০ বিঘা জমি ছিল ফতেপুর ইউনিয়নের বাগানপাড়া এলাকায়। তার তিন ছেলে মৃত মোহাম্মদ আলী, মৃত আমজাদ আলী ও রমজান আলীর ছেলেমেয়েরা উত্তরাধিকার সূত্রে এই জমির মালিক। কিন্তু মৃত মোহাম্মদ আলী ও আমজাদ আলীর ছেলেমেয়েদের ভাগ না দিয়ে জমিতে থাকা ৪০ বছর বয়সী ৭৩টি গাছ জোরপূর্বক বিক্রি করেছেন মো. রমজান আলীর তিন ছেলে মনিরুল, নুরুল ও হোসেন।

 

এনিয়ে আদালতে মামলা চলমান থাকলেও আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জোরপূর্বক গাছগুলো বিক্রি করেছেন তারা। এনিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও সুরাহা পায়নি দুই ভাইয়ের ১৫ ছেলে-মেয়ে। এছাড়াও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা। নাচোল উপজেলার ফতেপুর মৌজার জেল নম্বর ১০৬ ও খতিয়ান নম্বর ৩৯৮ এর দাগ নম্বর ১০০ এর জমির গাছ কাটা হচ্ছে।

 

জমির মালিক মৃত আমজাদ আলীর ছেলে আজহারুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা আমবাগানটি পরিবারিকভাবে সবাই মিলে ফল বিক্রি করে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে থাকি। কিন্তু গত এক বছর থেকে সকলের জমি ও বাগান দখলের পায়তারা শুরু করে চাচা রমজান আলীর তিন ছেলে মনিরুল, নুরুল ও হোসেন। তারা জোরপূর্বক দখল করে গাছ বিক্রি করেছে। এমনকি আমাদের ভাগের গাছগুলো আমরা বিক্রি করতে চাইনি। অথচ জোরপূর্বক গাছগুলো কাটা হচ্ছে।

 

জমির আরেক অংশীদার মৃত মোহা. আলীর ছেলে আব্দুল বারী জানান, ৭৩টি গাছের গড় মূল্য প্রায় ৩০ হাজার টাকা করে। সে হিসেবে সর্বনিম্ন ৩০ হাজার টাকা করে প্রায় ২০ লাখ টাকা হয়। অথচ অন্য অংশীদারদের ভাগগুলো পানির দামে মাত্র ১১ লাখ টাকায় বিক্রি করেছে তারা। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া জমি থেকে আমাদেরকে বঞ্চিত করে এভাবে অত্যাচার করছে তারা। পুলিশের কাছে গিয়েও কোন সুরাহা পায়নি। এমনকি এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষপাতের বিষয়টিও আমাদেরকে অবাক করেছে।

 

তিনি আরও বলেন, গাছ কাটার বিষয়ে বাধা দিতে গেলে আমার প্রতি ৪ বার মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এনিয়ে আমার প্রায় ২-৩ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখন গাছ কাটতে বাধা দিতে গেলে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। আমরা অসহায়ত্বের মধ্যে দিন পার করছি। পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।

 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ওসির নির্দেশে দুই ভাইয়ের ছেলেমেয়েকে বঞ্চিত করে এক ভাইয়ের তিন ছেলে গাছগুলো বিক্রি করে কাটা শুরু করেছে। অথচ দীর্ঘদিন ধরে তারা একসাথে আমফল বিক্রি করে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে টাকা নিতো। স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আসজাদুর রহমান মান্নু মিয়ার যোগসাজশে তারা এভাবে জোরপূর্বক গাছ বিক্রি করছে। এর আগে এসব কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করতে গেলে তাদেরকে মারধরও করেছে তিন ভাই মনিরুল, নুরুল ও হোসেন।

 

আমগাছের ক্রেতা সুমন আলী জানান, আমি নগদ টাকায় ১১ লাখ ৪০ হাজারে গাছগুলো মনিরুলের কাছ থেকে কিনে নিয়েছে। থানার সালিশ মারফতে গাছগুলো কাটছি। জমির মালিকদের কিসের বিরোধ রয়েছে, তা আমাদের জানা নেই।

 

এবিষয়ে অভিযোগ অস্বীকার করে গোবরাতলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আসজাদুর রহমান মান্নু বলেন, এসব নিয়ে আমার কোন আগ্রহ নেই। থানা থেকে শালিসে সমাধান করে দেয়ার অনুরোধ করলে আমরা একাধিকবার শালিসে বসি। তবে এতে ভাগ-বাঁটোয়ারার অর্থ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ থাকায় সুরাহা হয়নি।

 

অভিযুক্ত মনিরুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। নাচোল থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) মিন্টু রহমানের সাথে মুঠোফোনে ও হোয়াটসঅ্যাপে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। নাচোল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বা এসিল্যান্ড মিথিলা দাসের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন কেটে দেন।

Please Share This Post in Your Social Media

দৈনিক ঢাকার কন্ঠ
© All rights reserved © 2012 ThemesBazar.Com
Design & Developed BY Hostitbd.Com